শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০৪ অপরাহ্ন
জহির সিকদার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা
আগামীকাল ১৮অক্টোবর রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ‘ধর্মতীর্থ গণগত্যা দিবস’। ১৯৭১ সালের এই দিনে (১৮ অক্টোবর) ধর্মতীর্থ এলাকায় বর্বর পাকিস্তানি সেনা, রাজাকারসহ তাদের এ দেশীয় সহযোগীরা উপজেলার চুন্টা ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নের শতাধিক নারী-পুরুষকে একত্র করে (যার অধিকাংশ সংখ্যালঘু) নির্যাতন করে গণহত্যা করে। তখন থেকে এদিনটিকে ধর্মতীর্থ গণহত্যা দিবস হিসেবেই পালিত হয়ে আসছে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এক দল মুক্তিযোদ্ধা মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উপজেলার কালীকচ্ছ ধর্মতীর্থ এলাকায় স্থানীয় রাজাকার প্রধান, সরাইল থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মুসলীম লীগ নেতা আবদুল মন্নাফ ঠাকুর ও তাঁর দোসর বর্বর পাকিস্থানি সেনা কর্মকর্তা (ক্যাপ্টেন) এ রহমান খানসহ কয়েকজন পাকসেনাকে হত্যা করে।
যুদ্ধকালীন সরাইল থানা মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ কমান্ডার আবদুল্লাহ ভূইয়া বলেন, ‘আবদুল মন্নাফ ঠাকুর নিহত হওয়ার পর শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন তার জামাতা (ঘরজামাই) ফয়েজুর রহমান ওরফে সেলুর বাপ। তখন সেলুর বাপ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। ৬ অক্টোবরের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সেলুর বাপের নেতৃত্বে ১৮ অক্টোবর ১৯৭১ সালে ধর্মতীর্থ এলাকায় গণহত্যা চালায় পাক সেনারা। ওই দিন শতাধিক নরনারীকে (যার অধিকাংশ সংখ্যালঘু) হত্যা করা হয়।’ এ জন্য এ ঘটনাটিকে ধর্মতীর্থ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে । গত বছর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে।এ দিবসটি পালন করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সরাইল উপজেলার সেই বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের জন্য সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এটি সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ নৌঘাটে অবস্থিত। এখানে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া ৪৬ জনের তালিকাযুক্ত একটি নামফলক ছিল। গত বছরের ১০ জুলাই সন্ধ্যায় ওই বধ্যভূমি থেকে দুর্বৃত্তরা সেই নামফলকটি উধাও করে দেয়। এ নিয়ে গত বছরের জুলাই মাসে ‘বধ্যভূমি থেকে উধাও শহীদদের নামফলক’ শিরোনামে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় একটি সচিত্র প্রতিবেদন ও প্রকাশিত হয়েছিল।
এর পর নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এস এম মোসা বধ্যভূমির ঠিক মাঝখানে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করেন। যাতে লেখা রয়েছে ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যার স্মৃতি বিজড়িত স্থান। এই স্থানের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হইল।’