শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
পিরোজপুর শিক্ষককে হাতুড়িপেটা, বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার কাউখালীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে জনসচেতনতা ও প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা পিরোজপুরে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন নেছারাবাদে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লোহার পুল ও প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মঠবাড়িয়ায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল গৃহবধূর লাশ, স্বামী ও শ্বশুর আটক পিরোজপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহবায়ক কমিটি ঘোষণা কাউখালীতে মন্ডপগুলোতে চলছে দুর্গা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পিরোজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান নেছারাবাদে ২৬ জন শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা পিরোজপুরে পিয়ার পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল ভান্ডারিয়ায় ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে নদীতে জাল ফেলছে জেলেরা! মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশ পিরোজপুর ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর কমিটি গঠন: সোহাগ সভাপতি, মিঠু সম্পাদক কাউখালীতে অপহরণের তিন মাস পর সপ্তম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী উদ্ধার কাউখালীতে জেলের মরদেহ উদ্ধার ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীকে প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ভাণ্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন কামিল মাদ্রাসায় আলিম শ্রেণীর প্রথম ক্লাস উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা ভাণ্ডারিয়ার চাঞ্চল্যকর আসমা হত্যার বিচার দাবিতে পিরোজপুরে মানববন্ধন কাউখালীতে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত মঠবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেফতার
পুলিশের নির্যাতনে শিকার হয়ে অন্ধপ্রায় দুই সাংবাদিক

পুলিশের নির্যাতনে শিকার হয়ে অন্ধপ্রায় দুই সাংবাদিক

পুলিশের রোষানলে পড়ে তাদের নৃশংসতায় আজ অন্ধপ্রায় কক্সবাজার ও ময়মনসিংহের দুইজন সাংবাদিক, কক্সবাজারের টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা মানেই ছিল ক্রসফায়ার অথবা অকথ্য নির্যাতন। অপরদিকে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের সাবেক উপ পরিদর্শক (এসআই) আক্রাম হোসেনের কর্মকান্ডও ছিল প্রদীপের মতই ভয়ঙ্কর। সাধারণ মানুষের মত এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার কবল থেকে রক্ষা পাননি দুইজন সাংবাদিক। এদের একজন হলেন, কক্সবাজারের ফরিদুল মোস্তফা খান এবং ময়মনসিংহের সিনিয়র সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক।টেকনাফের ওসি প্রদীপ দাশের মাদক সংশ্লিষ্টতা, মাদক ব্যবসা, গ্রেপ্তার বাণিজ্য, ক্রসফায়ার এসব অপরাধমূলক সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক কক্সবাজারবাণী ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল জনতারবাণী ডটকম এর সম্পাদক ও প্রকাশক ফরিদুল মোস্তফার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ৬টি মিথ্যা মামলা। এসব মামলায় তাকে থাকতে হয় দীর্ঘ ১১ মাস ৪ দিন কারাগারে। এরআগে চালানো হয় তার উপর অকথ্য নির্যাতন। অপরদিকে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের এসআই আক্রাম হোসেনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতা, মাদক ব্যবসা, গ্রেপ্তার বাণিজ্য এসব অপরাধমূলক সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৩টি মামলায় পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দুই মাস থাকতে হয় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে। এরআগে তার চোখ বেঁধে অকথ্য নির্যাতন করে এসআই আক্রাম হোসেন।জানা যায়, প্রদীপের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর এলাকার (১ নম্বর সেকশনের শাহ আলীবাগের প্রতীক হাসনাহেনা) ভাড়া বাসা থেকে ফরিদুল মোস্তফাকে ধরে টেকনাফ থানায় নিয়ে তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায় প্রদীপ কুমার। সে সময় তার চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়ে নির্যাতন করায় বর্তমানে দু’টি চোখই নষ্ট হওয়ার উপক্রম। তার হাত-পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফরিদুল মোস্তফা খানকে পুলিশ হেফাজতে লোমহর্ষক নিপীড়ন করা হয়। তাকে ক্রসফায়ারে দেয়ার পরিকল্পনা করে ওসি প্রদীপ। পানির পরিবর্তে পশ্রাব খাওয়ানো হয়। নির্যাতনে তার চোখ ফুলে যায়। এসব প্রত্যক্ষ করে সারাদেশের সাংবাদিকরা ফুঁসে উঠে। তারা মানববন্ধন ও এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। বিডি২৪ লাইভ ও দৈনিক আমাদের কন্ঠে সংবাদ প্রকাশ হলে আন্দোলন শুরু হয়। ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক বনেক কেন্দ্রীয় কমটির পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলি প্রত্যাহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাবর লিখিত আবেদন করে। ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির এসআই আক্রাম হোসেনের বিরুদ্ধে নিজের সোর্স দিয়ে মাদক ব্যবসা, গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এসআই আক্রাম দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন সম্পাদক খায়রুল আলম রফিকের উপর ক্ষুদ্ধ হয়। তার রোষানলে নৃশংসতার শিকার হন সাংবাদিক রফিক। ২০১৮ সালে সংবাদ প্রকাশের জেড় ধরে ঐবছরের ২৯ নভেম্বর খায়রুল আলম রফিককে গ্রেপ্তার করে এসআই আক্রাম হোসেন। গ্রেপ্তার করার পর থেকেই খায়রুল আলম রফিকের চোখ বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের ছবি তুলে প্রতিপক্ষের হাতেও তুলে দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর রফিককে আসামি করে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় মামলা। চলতি সপ্তাহে রফিকের চোখবাঁধা ছবি আবারও ভাইরাল হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝর উঠেছে ।সাংবাদিক মহলে খায়রুল আলম রফিক জানান, ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেইটের বিপরীত দিকে আমি অবস্থান করছিলাম। এসআই আক্রামের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ আমার চোখ বেঁধে একটি কালো গাড়িতে করে আমার পত্রিকার কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে থাকা আমার জমি ক্রয়ের দলিল, ব্যাংকের চেক ও কম্পিউটার জব্দ করে। দলিল ও ব্যাংক চেক এবং একটি স্যামসন মোবাইল প্রতিপক্ষের কাছে তুলে দিয়ে জব্দ দেখানো হয় শুধু কম্পিউটার। সেখান থেকে আমাকে নেয়া হয় দুর্গম চর এলাকায়। দুচোখ বেঁধে দু হাত পেছনে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় এসআই আক্রামের নেতৃত্বে। এসময় আক্রামের মোবাইলে একজন ফোন করে বলে যে, এখন আর ক্রসফায়ারে দেয়ার দরকার নাই। টিভিতে তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। এসআই আক্রাম তখন গালি দিয়ে বলে যে, সাংবাদিকের বাচ্চা, অসভ্যের বাচ্চা। তুই আজ বেঁচে গেলি। টেলিভিশনে সংবাদ হওয়ায় কারণে। সেখান থেকে এসআই আক্রামের নেতৃত্বে রফিককে নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। ডিবি অফিসে একটি আলমারির নিচে তাকে ফেলে রাখে। রফিক তার চোখ বাঁধা অবস্থায় শুনতে পায় কয়েকজনকে আক্রাম বলছে, তোমরা প্রত্যেকে ৫শ’ টাকা করে নিয়ে যাও। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রচার কর যে, একে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এসময় তারা বলে, ৭১ টেলিভিশনে দেখানো হচ্ছে চাঁদাবাজির অভিযোগে রফিক আটক। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সাংবাদিক রফিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (আইসিটি) মামলা দেয়া হয়। মামলার বাদী করা হয় একজন প্রভাবশালী ব্যািক্তকে। সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক বলেন, ডিবি কার্যালয়ে দীর্ঘ ১৬ ঘন্টা খাবার এমনকি পানিও দেয়া হয়নি আমাকে। কান্নকাটি শুরু করি। এসময় ডিবির ওসি (তদন্ত) ফারুক হোসেন দয়াপরবশ হয়ে আমাকে খাবার ও পানির ব্যবস্থা করেন। এরপর কয়েকদিন পরে আরো ২টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ২মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাই। সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক আক্ষেপ করে বলেন, ময়মনসিংহে আমার পক্ষে প্রথমে কোন আইনজীবি দাঁড়ায়নি, কয়েকদিন পরে আমার মামা এড. খায়ের শুনে দাড়িঁয়েছে। যার নেপথ্যের কারণও ছিল এসআই আক্রাম। পরবর্তীতে এসব মামলার বাদীগণ স্ট্যাম্পের মাধ্যমে মামলা আপোষ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি বরাবরে এসআই আক্রামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে বদলী করা হয় জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানায়, এর ২০দিন পর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থানায়।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন










© All rights reserved © 2025 pirojpursomoy.com
Design By Rana